আকুল নিবেদন এই যে, আমি আপনার এক নগণ্য গোলাম। ধরত্রীর এক বিচ্ছিন্ন ভূখন্ডে, প্রতিনিয়ত আপনার বিচ্ছেদে ছটফট করি।
আমি জানি আপনি এই গোনাহগার উম্মতদের আকুতি-মিনতি নিঃসন্দেহে অবগত, পরম করুণাময় রব আপনাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছেন।
"তু কুজা, মান কুজা!(কোথায় আপনি আর কোথায় আমি!)
তু আমিরে হারাম, মে ফকিরে আজম!
প্রশংসাকারীগণ আপনার কী প্রশংসা করবে? লেখকরাই বা আপনার গুণগান কতটুকু লিখতে পারবে? আল্লাহর শপথ, সকল সমুদ্রও যদি কালিতে পরিণত হয়, আর গাছের ডালগুলােকে যদি কলম বানানাে হয়। তবুও জিন-ইনসান তাঁর মহিমা লিখে শেষ করতে পারবে না। সেই মর্যাদার সঠিক উপলব্ধিও তাদের পক্ষে অসম্ভব।"
ভালবাসার শাখা-শৃংখলে,
বিন্দু ফোঁটায় সিন্দু বইছে।
ধরাধম যখন ধূসরালোয় ম্লান-
ঐশী নূরে মরুর প্রান্তরে,
ভেসে আসে কার তান!
হে প্রিয় রাসূল মোর, প্রেমের অভিধান!"
✍ [এম.বি.সানি]
"আপনার মত সুন্দর কোন মানুষ আমার দু'চোখ কভু দেখেনি।
আপনার চেয়ে অধিক সুশ্রী কোন সন্তান, কোন মা কখনাে জন্ম দেন নি।
কোন ক্রটিই আপনাকে স্পর্শ করেনি।
যেমনটি আপনি চেয়েছিলেন, তেমন করেই যেন আপনার রব আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।
[মিশকাতুল মাসাবীহ শরীফ। অধ্যায়- প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম ও গুণাবলীর বর্ণনা, পৃষ্ঠা : ২১৮।]
তব প্রেম পিপাসায়, মম হৃদয় স্নাত।
অবলুন্ঠিত, অবিমিশ্র মায়া,
ঘেঁচড়া নিহীত ক্ষীণ অন্তর-কায়া!
ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ) -
তব প্রেমের ক্ষুরধার খঞ্জরে,
বিলীন এ সফরনামা।"
✍ [এম.বি.সানি]
আপনি না হলে তো নিখিল বিশ্বের কিছুতেই সৃষ্টি হতো না। আমাদের স্বীয় আত্মার অস্তিত্বও তো নিজের নয়, বরং আপনার করুণায় পেয়েছি। এসেছি আপনার অস্তিত্বের উসীলায়,
কাল হাশরের মায়দানেও উথিত হব আপনার জন্য, আপনার উসীলায়, আপনারই দিকে।
"সৃষ্টিকূলের উৎসমূলের তিনিই উপাদান,
এক হতে আধিক্যে তিনি বেষ্টিত সমান।"
বন্যপশুরা আপনার নিকট নিজের কষ্টের কথা ব্যক্ত করেছে। আমি না হয় তাদের চেয়েও অধম, নালায়েক।
হায় মেরে আক্বা! একবার অর ফের বুলালিজিয়ে মুঝে।
মৃত্যুর পূর্বে একটাই আরজ, দীদার দিয়ে এই তপ্ত হৃদয়কে শীতল করে দিন। এ কেমন জীবন যদি আপনাকেই না পেলাম? আমি যে বরবাদ হয়ে যাব।
দীদারের আশায় বুক বাঁধি।"
✍ [এম.বি.সানি]
"হে সৃষ্টির সেরা মহামানব! আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমার আগ্রহী হৃদয় শুধু আপনাকেই চায়, আর কাউকে নয়। আপনার মহিমার শপথ! আমি আপনারই অনুরাগী। আল্লাহ জানেন, আমি আপনাকেই চাই। এ নিখিল ধরত্রীকে আপনি স্বীয় অনুগ্রহে পরিপূর্ণ করেছেন।"
"মগযে কুরআ, রূহে ঈমা, জানে দ্বী;
হাস্তে হুব্বে রাহমাতুল্লিল আলামীন।"
✍ আ'লা হযরত (রহঃ) হয়ত এজন্যই বলেছেন,
"লামইয়াতি নাযীরুকা ফী নাযারিন,
মিছলে তো না শোদ পয়দা জানা!"
হযরত ওয়াইছ করনী (রাঃ) দন্ত ফেলেছিলেন,
ইমাম শাফেঈ (রহঃ) মদিনায় গড়াগড়ি খেতেন, আপনার আদবে জীবনে যিনি মদিনা শরীফের তপ্ত বালিকণার উপর কখনো জুতা পায়ে হাঁটেন নি। আমরা ভুল গেছি সেই আদব তাই হয়ত আপনাকে খুঁজে পাই না।
আপনারই ভালবাসায় ইমাম মালেক (রহঃ) কোন দিন মদিনা ত্যাগ করেন নি, মদিনার বাইরে মৃত্যুবরণের আশংকায়।
ভাবি সেই দিনগুলো, যখন আপনার চরণধূলি চম্বুনে মরুর বালিকণাগুলো আপ্লুত হয়ে যেত।
কখনো বা আপনার বিচ্ছেদে মৃত খেজুর গাছ কান্নায় ভেঙে পড়ত।
আহ! কেমন ছিল সেই দিনগুলো আপনাকে দেখে রাস্তার চারপাশের পাথরগুলোও সালাম দেয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ত, আমি যদি সেই পাথর হতাম তাহলে কতই না সৌভাগ্যবান হতাম! হযরত বেলাল (রাঃ)'র আজানের ধ্বনিতে উন্মাদ করা লুকন্ত ভালবাসাগুলো না জানে কেমন ছিল!
ইশক্বে মুস্তফা (ﷺ)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
হে প্রিয়ংবদ রাসূল, প্রিয় আক্বা (ﷺ),
কবি শেখ সাদী (রহঃ) কতই সুন্দর লিখেছেন,
সকল প্রশংসা আল্লাহ্ (ﷻ)'র যিনি প্রেরণ করেছেন আপনার ন্যায় এমন চরম প্রশংসিত রাসূল, মুক্তির দূত আর ভালবাসার মূর্তপ্রতীক। আবহমান কাল ধরে, দিবা-রাত্রির প্রাচীর ভেদ করে, তামাম মাখলুকাত আপনার শান-সিফাত বর্ণনায় বিভোর ছিল। এর জন্য এতটুকুই যথেষ্ঠ যে, স্বয়ং রব আপনার সসর্বশ্রেষ্ঠ শান বর্ণনাকারী। আপনার প্রশংসাগাঁথা আলমে আরওয়াহ থেকে শুরু ছিল কিয়ামত পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে।
✍ ইমাম নু'মান বিন সাবিত (রহঃ) কতই না সুন্দর বলেছেনঃ
"ইশকের নহরে, জীবনের প্রহরে,
আপনার (ﷺ) সভাকবি ✍ হযরত হাসসান ইবনে সাবিত (রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু) কতই উত্তম বলে গেছেন,
"সীমাহীন অন্তরীক্ষে, হৃদয় নিংরানো
ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)-
✍ আ'লা হযরত (রহঃ) কতই উত্তম বলেছেন,
আপনার তরে আমার ইহকাল-পরকাল সব কোরবান হউক। জঙ্গলের নেকড়ে আর হরিণীও আপনার নিকট আশ্রয় ও নিরাপত্তা লাভের করেছে। এই অধমকেও আপনার করুণার ছায়াতলে আশ্রয় দান করুন।
"আপনার নামে করুণা যাচি,
ইমাম নু'মান বিন সাবিত (রহঃ) এর ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে,
হে প্রিয় রাসূল (ﷺ)! আপনার প্রতি ভালবাসা ইমানের পূর্বশর্ত। ✍ তাই তো আশিকে রাসূল কবি আল্লামা ইকবাল (রহঃ) কতই সুন্দরভাবে সেই বাস্তবতা লিখেছেন,
আপনার শানে নাজিল হয়েছে সমগ্র আল-কুরআন। আপনার চরিত্র বর্ণনাকারী স্বয়ং রব তা'য়ালা।
ইয়া ত্বয়াহা, হে ইয়াসিন! আপনার নূরের ফুল (আহলুল বায়আত) সৌরভ ছড়াবে কিয়ামত পর্যন্ত। আপনার নিকট লিখছি হে পবিত্র পরমাত্মা যার ভালবাসায়,
ইয়া মুদ্দাচ্ছির, ইয়া মুজাম্মিল! আমি না জানি ভক্তি, না জানি স্তুতি, কি শব্দ সম্ভারে, কি বাক্যগাঁথায় আপনাকে স্মরণ করতে হয় তাও জানি না। ওগো প্রিয় রাসূল, আপনাকে পাওয়ার আশায় হৃদয় বড় ব্যাকুল। ভাঙা হাতে, রিক্ত কালিতে এমন স্বত্তাকে কিভাবে ডাকি?
ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আজও ভাবনার রাজ্যে পারি জমাই, কেমন ছিল সেই দিনগুলো। যেদিন আপনার শুভ আগমনে আসমানের চাঁদ ঢলে পড়েছিল, আপনার আঙুলের ইশারায় চাঁদও খেলনা হয়ে দোলত? কতইনা পবিত্র ছিল সে মুহুর্ত।
অতএব, ইয়া সায়্যিদিল আবরার (ﷺ) আমার অপূর্ণতাকে পূর্ণ করে দিন। মনের ব্যাকুলতাকে আকুলভাবে আপনার কদম মুবারকে টেনে নিন। আশ্রয়হীন আমাকে করুণাময় রব (ﷻ)'র ওয়াস্তে আশ্রয় দান করুন, গোস্তাখী মার্জনা করে আপনার দীদারে ধন্য করুন।
____________________________
✍ কৃতঃ (মাসুম বিল্লাহ সানি)