প্রবৃত্তির আনুগত্যের ক্ষতি



জায়িজ ও না-জায়িজের তোয়াক্কা না করে নফসের সকল চাহিদা পূরনের কাজে লেগে যাওয়াকে প্রবৃত্তির আনুগত্য বলে।(বাতেনি বিমারিয়ু কি মালুমাত,পৃষ্ঠা ১০১)নিঃসন্দেহে নফসের চাহিদা পূরণে লেগে থাকা শুধু ক্ষতিই ক্ষতি।

প্রিয় নবী(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন,"তিনটি বিষয় ধ্বংসে নিক্ষেপ করে দেয়।১.লোভ ও লালসায় মগ্ন থাকা ২.নফসের আনুগত্য করা ও ৩.বান্দা নিজের ওপর গর্ব করা।(আল মুজামুল আওসাত,৪র্থ খন্ড,২১২ পৃষ্ঠা)

প্রবৃত্তির আনুগত্যের ধ্বংসলীলা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,"অতঃপর তাদের পর তাদের স্থলে ঐ অপদার্থ উত্তরাধিকারীগণ আসলো যারা নামাজ সমূহ নষ্ট করেছে এবং নিজেদের কু-প্রবৃত্তিগুলোর অনুসরণ করেছে।সুতরাং অনতিবিলম্বে তারা দোজখের মধ্যে"গাহ্য" এর জঙ্গল পাবে।"(সূরা মরিয়ম,আয়াত নং-৫৯)

প্রিয় মুসলমান ভাই ও বোনেরা আপনারা জানলেন তো,নিজের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ হতে পারে ধ্বংসের কারণ।জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ।আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে বিবেক দিয়েছেন। কোন কাজ ভালো কোন কাজ খারাপ আমরা বুঝার ক্ষমতা আছে।তাই আমাদের উচিত নিজ নফসের অন্ধভাবে আনুগত্য না করে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা। তবেই আমরা সফলকাম হতে পারব।আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দিন।আমিন

✒Swadhin Ahmod Rezvi

ইশক্বে মুস্তফা (ﷺ)



আকুল নিবেদন এই যে, আমি আপনার এক নগণ্য গোলাম। ধরত্রীর এক বিচ্ছিন্ন ভূখন্ডে, প্রতিনিয়ত আপনার বিচ্ছেদে ছটফট করি।
আমি জানি আপনি এই গোনাহগার উম্মতদের আকুতি-মিনতি নিঃসন্দেহে অবগত, পরম করুণাময় রব আপনাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছেন।
"তু কুজা, মান কুজা!(কোথায় আপনি আর কোথায় আমি!)
তু আমিরে হারাম, মে ফকিরে আজম!
প্রশংসাকারীগণ আপনার কী প্রশংসা করবে? লেখকরাই বা আপনার গুণগান কতটুকু লিখতে পারবে? আল্লাহর শপথ, সকল সমুদ্রও যদি কালিতে পরিণত হয়, আর গাছের ডালগুলােকে যদি কলম বানানাে হয়। তবুও জিন-ইনসান তাঁর মহিমা লিখে শেষ করতে পারবে না। সেই মর্যাদার সঠিক উপলব্ধিও তাদের পক্ষে অসম্ভব।"
ভালবাসার শাখা-শৃংখলে,
বিন্দু ফোঁটায় সিন্দু বইছে।
ধরাধম যখন ধূসরালোয় ম্লান-
ঐশী নূরে মরুর প্রান্তরে,
ভেসে আসে কার তান!
হে প্রিয় রাসূল মোর, প্রেমের অভিধান!"

✍ [এম.বি.সানি]
"আপনার মত সুন্দর কোন মানুষ আমার দু'চোখ কভু দেখেনি।
আপনার চেয়ে অধিক সুশ্রী কোন সন্তান, কোন মা কখনাে জন্ম দেন নি।
কোন ক্রটিই আপনাকে স্পর্শ করেনি।
যেমনটি আপনি চেয়েছিলেন, তেমন করেই যেন আপনার রব আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।
[মিশকাতুল মাসাবীহ শরীফ। অধ্যায়- প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম ও গুণাবলীর বর্ণনা, পৃষ্ঠা : ২১৮।]
তব প্রেম পিপাসায়, মম হৃদয় স্নাত।
অবলুন্ঠিত, অবিমিশ্র মায়া,
ঘেঁচড়া নিহীত ক্ষীণ অন্তর-কায়া!
ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ) -
তব প্রেমের ক্ষুরধার খঞ্জরে,
বিলীন এ সফরনামা।"

✍ [এম.বি.সানি]
আপনি না হলে তো নিখিল বিশ্বের কিছুতেই সৃষ্টি হতো না। আমাদের স্বীয় আত্মার অস্তিত্বও তো নিজের নয়, বরং আপনার করুণায় পেয়েছি। এসেছি আপনার অস্তিত্বের উসীলায়,
কাল হাশরের মায়দানেও উথিত হব আপনার জন্য, আপনার উসীলায়, আপনারই দিকে।
"সৃষ্টিকূলের উৎসমূলের তিনিই উপাদান,
এক হতে আধিক্যে তিনি বেষ্টিত সমান।"
বন্যপশুরা আপনার নিকট নিজের কষ্টের কথা ব্যক্ত করেছে। আমি না হয় তাদের চেয়েও অধম, নালায়েক।
হায় মেরে আক্বা! একবার অর ফের বুলালিজিয়ে মুঝে।
মৃত্যুর পূর্বে একটাই আরজ, দীদার দিয়ে এই তপ্ত হৃদয়কে শীতল করে দিন। এ কেমন জীবন যদি আপনাকেই না পেলাম? আমি যে বরবাদ হয়ে যাব।
দীদারের আশায় বুক বাঁধি।"
✍ [এম.বি.সানি]
"হে সৃষ্টির সেরা মহামানব! আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমার আগ্রহী হৃদয় শুধু আপনাকেই চায়, আর কাউকে নয়। আপনার মহিমার শপথ! আমি আপনারই অনুরাগী। আল্লাহ জানেন, আমি আপনাকেই চাই। এ নিখিল ধরত্রীকে আপনি স্বীয় অনুগ্রহে পরিপূর্ণ করেছেন।"
"মগযে কুরআ, রূহে ঈমা, জানে দ্বী;
হাস্তে হুব্বে রাহমাতুল্লিল আলামীন।"
✍ আ'লা হযরত (রহঃ) হয়ত এজন্যই বলেছেন,
"লামইয়াতি নাযীরুকা ফী নাযারিন,
মিছলে তো না শোদ পয়দা জানা!"
হযরত ওয়াইছ করনী (রাঃ) দন্ত ফেলেছিলেন,
ইমাম শাফেঈ (রহঃ) মদিনায় গড়াগড়ি খেতেন, আপনার আদবে জীবনে যিনি মদিনা শরীফের তপ্ত বালিকণার উপর কখনো জুতা পায়ে হাঁটেন নি। আমরা ভুল গেছি সেই আদব তাই হয়ত আপনাকে খুঁজে পাই না।
আপনারই ভালবাসায় ইমাম মালেক (রহঃ) কোন দিন মদিনা ত্যাগ করেন নি, মদিনার বাইরে মৃত্যুবরণের আশংকায়।
ভাবি সেই দিনগুলো, যখন আপনার চরণধূলি চম্বুনে মরুর বালিকণাগুলো আপ্লুত হয়ে যেত।
কখনো বা আপনার বিচ্ছেদে মৃত খেজুর গাছ কান্নায় ভেঙে পড়ত।
আহ! কেমন ছিল সেই দিনগুলো আপনাকে দেখে রাস্তার চারপাশের পাথরগুলোও সালাম দেয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ত, আমি যদি সেই পাথর হতাম তাহলে কতই না সৌভাগ্যবান হতাম! হযরত বেলাল (রাঃ)'র আজানের ধ্বনিতে উন্মাদ করা লুকন্ত ভালবাসাগুলো না জানে কেমন ছিল!


ইশক্বে মুস্তফা (ﷺ)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
হে প্রিয়ংবদ রাসূল, প্রিয় আক্বা (ﷺ),
কবি শেখ সাদী (রহঃ) কতই সুন্দর লিখেছেন,
সকল প্রশংসা আল্লাহ্ (ﷻ)'র যিনি প্রেরণ করেছেন আপনার ন্যায় এমন চরম প্রশংসিত রাসূল, মুক্তির দূত আর ভালবাসার মূর্তপ্রতীক। আবহমান কাল ধরে, দিবা-রাত্রির প্রাচীর ভেদ করে, তামাম মাখলুকাত আপনার শান-সিফাত বর্ণনায় বিভোর ছিল। এর জন্য এতটুকুই যথেষ্ঠ যে, স্বয়ং রব আপনার সসর্বশ্রেষ্ঠ শান বর্ণনাকারী। আপনার প্রশংসাগাঁথা আলমে আরওয়াহ থেকে শুরু ছিল কিয়ামত পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে।
✍ ইমাম নু'মান বিন সাবিত (রহঃ) কতই না সুন্দর বলেছেনঃ
"ইশকের নহরে, জীবনের প্রহরে,
আপনার (ﷺ) সভাকবি ✍ হযরত হাসসান ইবনে সাবিত (রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু) কতই উত্তম বলে গেছেন,
"সীমাহীন অন্তরীক্ষে, হৃদয় নিংরানো
ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)-
✍ আ'লা হযরত (রহঃ) কতই উত্তম বলেছেন,
আপনার তরে আমার ইহকাল-পরকাল সব কোরবান হউক। জঙ্গলের নেকড়ে আর হরিণীও আপনার নিকট আশ্রয় ও নিরাপত্তা লাভের করেছে। এই অধমকেও আপনার করুণার ছায়াতলে আশ্রয় দান করুন।
"আপনার নামে করুণা যাচি,
ইমাম নু'মান বিন সাবিত (রহঃ) এর ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে,
হে প্রিয় রাসূল (ﷺ)! আপনার প্রতি ভালবাসা ইমানের পূর্বশর্ত। ✍ তাই তো আশিকে রাসূল কবি আল্লামা ইকবাল (রহঃ) কতই সুন্দরভাবে সেই বাস্তবতা লিখেছেন,
আপনার শানে নাজিল হয়েছে সমগ্র আল-কুরআন। আপনার চরিত্র বর্ণনাকারী স্বয়ং রব তা'য়ালা।
ইয়া ত্বয়াহা, হে ইয়াসিন! আপনার নূরের ফুল (আহলুল বায়আত) সৌরভ ছড়াবে কিয়ামত পর্যন্ত। আপনার নিকট লিখছি হে পবিত্র পরমাত্মা যার ভালবাসায়,
ইয়া মুদ্দাচ্ছির, ইয়া মুজাম্মিল! আমি না জানি ভক্তি, না জানি স্তুতি, কি শব্দ সম্ভারে, কি বাক্যগাঁথায় আপনাকে স্মরণ করতে হয় তাও জানি না। ওগো প্রিয় রাসূল, আপনাকে পাওয়ার আশায় হৃদয় বড় ব্যাকুল। ভাঙা হাতে, রিক্ত কালিতে এমন স্বত্তাকে কিভাবে ডাকি?
ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আজও ভাবনার রাজ্যে পারি জমাই, কেমন ছিল সেই দিনগুলো। যেদিন আপনার শুভ আগমনে আসমানের চাঁদ ঢলে পড়েছিল, আপনার আঙুলের ইশারায় চাঁদও খেলনা হয়ে দোলত? কতইনা পবিত্র ছিল সে মুহুর্ত।
অতএব, ইয়া সায়্যিদিল আবরার (ﷺ) আমার অপূর্ণতাকে পূর্ণ করে দিন। মনের ব্যাকুলতাকে আকুলভাবে আপনার কদম মুবারকে টেনে নিন। আশ্রয়হীন আমাকে করুণাময় রব (ﷻ)'র ওয়াস্তে আশ্রয় দান করুন, গোস্তাখী মার্জনা করে আপনার দীদারে ধন্য করুন।

____________________________
✍ কৃতঃ (মাসুম বিল্লাহ সানি)

দরসে হাদিসঃ মানুষের প্রতিটি অঙ্গের যিনা



عن ابی هریرة قال قال رسول الله ﷺ ان الله کتب علی ابن ادم حظه من الزنا ادرک ذٰلک لا محلة فزنا العین النظرو زنا اللسان المنطق والنفس تمنی وتشتهی والفرج یصدق ذلک ویکذبه۔(متفق علیه)
وفی رویة لمسلم قال کتب علی ابن ادم نصیبه من الزنا مدرک ذٰلک لا محالة العینان زناهما النظرو الا ذنان زناهما الاستماع واللسان زناه الکلام والید زناها البطش والرجل زناها الخطٰی والقلب یهوی ویتمنی ویصدق ذٰلک الفرج ویکذبه۔
অনুবাদ : হযরত আবু হোরাইরা (رضی الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুজুর (ﷺ) এরশাদ করছেন, " আল্লাহ তা'আলা প্রতিটি মানুষের জন্য তার যিনার অংশ লিপিবদ্ধ করেছেন , যা সে অবশ্যই পাবে ৷সুতরাং চক্ষুর যিনা হচ্ছে কুদৃষ্টি , আর জিহ্বার যিনা হচ্ছে আলোচনা করা ৷আর মনে প্রবৃত্তি ইচ্ছা ও কামনা করে আর লজ্জাস্থান ওই কামনাকে সত্যায়িত কিংবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে ৷—(বোখারী,মুসলিম) 
আর ইমাম মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে যে, আদম —সন্তানদের ঊপর যিনার অংশ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে,যা সে অবশ্যই পাবে ৷ চক্ষুর যিনা হচ্ছে দেখা, কানের যিনা হচ্ছে শ্রবণ করা এবং জিহ্বার যিনা হচ্ছে, আলোচনা করা, হাতের যিনা স্পর্শ করা, পায়ের যিনা পা বাড়ানো এবং মনের প্রবৃত্তি ইচ্ছা ও কামনা করে, আর লজ্জাস্থান সেটাকে সত্য কিংবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে ৷

✏🍭کتب علی ابن اٰدم ۔
এর ব্যাখ্যা : এখানে 'প্রতিটি মানূষ ' দ্বারা সাধারণ মানুষ বুঝানো উদ্দেশ্য ৷যা থেকে, বাল্যকালে মৃত্যুবরণকারী সন্তানগণ ,বিশেষ করে সম্মানিত নবীগণ রাসুলগণ,আউলিয়ায়ে কেরামগণ স্বতন্ত্র৷যারা সম্মানিত নবীগণকে এর অন্তর্ভুক্ত বলে বিশ্বাস করে তারা বে — দ্বীন ৷ অর্থ এ যে,সাধারণত মানুষ  যিনা কিংবা যিনার আনুষান্ঙ্গিক বিষয়াদিতে জড়িয়ে পড়ে ৷আল্লাহ তা'আলার বড় অনুগ্রহ এ যে , অন্ঙ্গ — প্রত্যন্ঙ্গের অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়া ও নিছক কুধারণার জন্য পাকড়াও করেননা ৷ 
হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস — ই দেহলভী (র) তাঁর আশি'আতুল লুম'আত গ্রন্থে লিখেছেন,যিনার অংশ মানে যিনার মাধ্যমসমূহ ৷এভাবে যে, মানুষের মধ্যে যৌন প্রবৃত্তি এবং নারীর প্রতি আসক্তি স্বভাবগতভাবেই সৃষ্টি করা হয়েছে ; কিন্তু আল্লাহ যাকে চান তাকে তা থেকে রক্ষা করেন ৷
স্মার্তব্য যে , হযরত ইউছুফ (علیه السلام) র পবিত্র হ্নদয়ে ওই বিশেষ সময়ে যুলাইখার প্রতি বিন্দুমাত্রও আসক্তি জন্মেনি ৷ 

🍭✏فزنا العین النظر۔
এর ব্যাখ্যা : পরনারীর প্রতি আসক্তির কারণে ৷
স্মার্তব্য যে, হঠাৎ দৃষ্টি পতিত হওয়া ক্ষমাযোগ্য ৷ ইচ্ছাকৃত দেখার জন্য পাকড়াও করা হবে ৷ এখানে দ্বিতীয় প্রকার দৃষ্টি বুঝানো উদ্দেশ্য ৷ 

✏🍭وزنا اللسان المنطق۔
এর ব্যাখ্যা : পরনারীদের সৌন্দর্যের প্রশংসা করা জিহ্বা বা মুখের যিনা , তা সাগ্রহে তৃপ্তিসহকারে উপভোগের জন্য শ্রবণ করা কানের যিনা ৷কোন কোন মহিলা স্বীয় স্বামীর নিকট অন্য মহিলার রুপ ও গুণ বর্ণনা করে থাকে ৷ এটা গুরুত্বর অপরাধ ৷ 

✏🍭وا لاذنان زنا هما الاستماع۔
এর ব্যাখ্যা : কান লাগিয়ে মনযোগ সহকারে ৷ এ জন্য এখানে  استماع— باب افتعال  থেকে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ 

🍭✏والرجل زناهما الخطٰی ۔
এর ব্যাখ্যা : সারকথা এ যে, একটি যিনা অনেকগুলো ছোট ছোট যিনার সমষ্টি ৷প্রত্যেক অন্ঙ্গের যিনা আলাদা৷ যিনাকারী যিনা করার সময়  চোখ ,কান, জিহ্বা, হাত, পা সমস্ত অন্ঙ্গের যিনা করে থাকে ৷ এ জন্যই 'কন্কর নিক্ষেপ' করা হয় ; শুধু খাসি করা হয় না৷ 

✏ویصدق ذٰلک الفرج ویکذبه۔
এর ব্যাখ্যা : সুতরাং মানুষের উচিত , যিনার আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি থেকেও নিজেকে রক্ষা করা ৷সিনেমা রেডিও টেলিভিশন ইত্যাদিতে ফিল্মী গান ও চলচ্ছিত্র প্রচার প্রসার ও প্রদর্শনের কুফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে ৷


🖋সাবিহা জান্নাত নুরী

নামাযে পাগড়ী না বেঁধে রুমালকে ঘোমটার ন্যায় দুই পাশে ঝুলিয়ে দেয়া



প্রশ্ন: ইদানিং কিছু ইমামকে দেখা যায় নামাযে পাগড়ী না বেঁধে রুমালকে মহিলার ঘোমটার ন্যায় দুই পাশে ঝুলিয়ে দেয়। রুকু সাজদার সময় টেনে টেনে ঠিক করতে দেখা যায়। ইমামের এহেন কাজ শরিয়তে কতটুকু বৈধ বা অবৈধ এ ব্যাপারে জানালে উপকৃত হব।

উত্তর: পাগড়ী পরিধান করা সুন্নাতে মুস্তাহাব্বা। পাগড়ী পরিধান করার ফজিলত হাদীসে পাক দ্বারা সাব্যস্ত। পাগড়ী বেঁধে নামায আদায়ের সাওয়াব পাগড়ী ছাড়া নামায আদায়ের চেয়ে ২৫ থেকে ৭০ গুণ বেশি। যা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
এ ছাড়াও হাদীসে পাকে উল্লেখ রয়েছে- عَلَيْكُمْ بِالعمائم فاِنّها سيماءُ الملائكة- অর্থা- তোমরা পাগড়ী বাঁধবে, কেননা এটা ফেরেশতাদের প্রতীক। [শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নম্বর ৬২৬২, কৃত: ইমাম বায়হাকী রাহ.] অপর হাদীসে পাকে রয়েছে ‘তোমরা পাগড়ী পরিধান কর, নিশ্চয় পাগড়ী ইসলামের নিদর্শন এবং তা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্যকারী। [তিরমিযি শরীফ: ১ম খণ্ড, ৩০৮ পৃষ্ঠা]

নামাযে ‘সদল’ বা কাপড় তথা চাদর বা রুমাল ঝুলিয়ে দেয়া মাকরূহে তাহরীমি। যেমন মাথা বা কাঁধের উপর চাদর, রুমাল, শাল ইত্যাদি এমনভাবে রাখা যে, উভয় প্রান্ত সরাসরি ঝুলতে থাকে। তবে যদি এক প্রান্ত এক কাধেঁর উপর রাখা হয় এবং অপর প্রান্ত ঝুলতে থাকে তাহলে অসুবিধা নেই। আজকাল দেখা যায়, কোন কোন নামাযী ও ইমাম মাথা বা কাধেঁর উপর এমনভাবে রুমাল ঝুলিয়ে রাখে যা রুকু অবস্থায় গলা, মাথা ও কাধেঁর উভয় প্রান্তে সরাসরি লটকে ও ঝুলে থাকে। এভাবে নামায পড়া মাকরূহ। এটা পাগড়ী বা আমামা নয় বরং নামাযের প্রতি অবহেলা।

তাছাড়া নামায অবস্থায় বার বার নড়াছড়া করা বা নামাযে আস্তিন, রুমাল বা চাদর বারবার উপরের দিকে এমনভাবে কুড়িয়ে নেয়া যাতে হাতের কুনুইগুলো প্রকাশ পায় তখনও নামায মাকরূহ হবে। এটা নামাযের প্রতি চরম অবহেলা ও অবজ্ঞা। নামাযের প্রতি অবশ্যই যত্নবান ও আন্তরিক হতে হবে নতুবা অবশ্যই গুনাহগার হবে। [ফাতহুল ক্বদীর, বাহরুর রায়িক এবং ফতোয়ায়ে রযভীয়া: ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪১৬ ও ৪২৩]

সালাফিরা এ বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে



সালাফি তথা আহলে হাদিসরা এ বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, বিশেঃষত নামায নিয়ে। 

অথচ ইমাম যাহাবি (রহ) বলেন- 

 هذا قول أهل السُّنّة والجماعة-‘

‘এটাই আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আক্বিদা যে কবিরা গুনাহের দরুন (ফাসেক হবে) কেউ কাফির হবে না।’’ ২১৯ 

ইমাম সুয়ূতী (রহ) বলেন-

لِأَنَّ مَذْهَبَ أَهْلِ السُّنَّةِ أَنْ لَا يَكْفُرَ أَحَدٌ بِذَنَبٍ

-‘‘আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মাযহাব হলো কেউ গুনাহের কারণে কাফের হয়না।’’ ২২০ 

আহলে হাদিসদের মুহাদ্দিস মোবারকপুরী বলেন-

وَقَالَ الْقَاضِي عِيَاضٌ وَهُوَ مَذْهَبُ أَهْلِ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ وَأَمَّا الْكَبَائِرُ فَلَا يُكَفِّرُهَا إِلَّا التَّوْبَةُ

-‘‘ইমাম কাজী আয়ায (রহ) এর এবং আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের মাযহাব হল কবিরাহ গুনাহের জন্য কেউ কাফির হবে না; যদিও তা তাওবা ছাড়া মাফ হয় না।’’২২১ 

তাই নামাযসহ বিভিন্ন ইবাদত কেহ না করলে তাকে কাফির বলা যাবে না; যতক্ষণ না সে এগুলো অস্বীকার না করবে।

হাদিস শরীফে কয়েকটি বাতিল ফিরকার নাম



হুযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র বাণীসমূহে উম্মতের যাবতীয় বিষয়ের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। হালাল-হারাম, করণীয় ও বৰ্জনীয় সবকিছু উম্মতের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে গেছেন। সুন্নাহ যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দান করেছেন। তিনি আপন উম্মতকে ঈমানের পর নামায, রোযা ইত্যাদি পূণ্য কাজের প্রতি যত্নবান হবার কার্যত শিক্ষাদান করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি উমতের মধ্যে নানা ভ্রান্ত দলের আবির্ভাব সম্পর্কে কখনো সংক্ষেপে আবার কখনো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা দিয়েছেন, যাতে সরলপ্রাণ মুসলমান কখনো তাদের বাহ্যিক চাল-চলন, আচার-আচরণ, সুন্দর সুন্দর কথায় প্রতারিত না হয়। এমনকি তাদের স্বযত্নে নামায-রোযা ও সুললিত কণ্ঠের তেলাওয়াতে কোরআন শুনেও তাদের ভ্রান্তির বেড়াজালে আটকে না পড়ে, তজ্জন্য হুশিয়ার করে দিয়েছেন। নিম্নে সরলপ্রাণ মুসলমানদের জ্ঞাতার্থে ঐসব হাদিস শরীফ পেশ করা হলো।

উল্লেখ্য যে, হাদিস শরীফে কয়েকটি বাতিল ফিরকার নাম সহ বর্ণিত হয়েছে।

যথা-খারেজী,কদরীয়া, মুরজিয়া ও জাহমীয়া। এটা হুযুর সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের "ইলুমে গায়েব’ বা অদৃশ্য জ্ঞানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিশুদ্ধ হাদিগ্রন্থগুলোতে ঐসব ফিরকার বর্ণনায় পৃথক পৃথক অধ্যায় রয়েছে সিহাহ সিত্তা ছয়টি বিশুদ্ধ হাদিসের কিতাব । যথা, বোখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, নাসায়ী শরীফ, আবুদাউদ শরীফ, তিরমিযি শরীফ ও ইবনে মাজা শরীফে অন্যান্য বাতিল ফিরকার চেয়ে ‘খারেজীদের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা বিদ্যমান। কারণ, এ দলটি মুসলমানদের মধ্যে বাতিল দলসমূহের সর্বপ্রথম দল। পরবর্তী সকল বাতিল ফিরকার মধ্যে তাদের কিছু কিছু আক্বীদা ও চরিত্র বিদ্যমান। যুগে যুগে ভিন্ন ভিন্ন
নামে বিভিন্ন ফিরকার আত্মপ্রকাশ ঘটলেও মৌলিক ক্ষেত্রে খারেজীদের সাথে তাদের সাদৃশ্য রয়েছে। তাই খারেজীদের সম্পর্কেই সর্ব প্রথম আলোচনা করছি।


পবিত্র কোরআনের পর ইসলামী জগতের সর্বাধিক বিশুদ্ধ কিতাব বোখারী শরীফের দ্বিতীয় খণ্ডে ইমাম বোখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নিম্নোক্ত শিরোনামে একটা অধ্যায় পেশ করেন।

باب قتال الخوارجوالملحدين
অর্থাৎ খারেজী ও মুলহীদীনদের (বাতিল আক্ৰীদা পোষণকারী) হত্যা করার বিধান সম্বলিত অধ্যায়।

অতঃপর তিনি উক্ত অধ্যায়ে একটি হাদিসে ‘মওকুফ’ (১) বর্ণনা করেন-

وكان ابن عمر يراهم شرارخلق الله وقال انطلقوا إلى آيات نزلت فى الكفار فجعلو ها على المومنين-
অর্থাৎ প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুম খারেজীদেরকে আল্লাহর সৃষ্টিতে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মনে করতেন। অতঃপর তিনি তার কারণ হিসেবে বলেন, নিশ্চয়ই তারা (খারেজীগণ) ঐ সব আয়াতের প্রতি মনোনিবেশ করেছে যেগুলো কাফিরদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে।অতঃপর ঐসব আয়াতকে ঈমানদারদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছেন। (বোখারী শরীফ, পৃষ্ঠা ১০২৪)

আলোচ্য হাদিসে হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা খারেজীদের গোমরাহীর মূল কারণ হিসেবে যে বিষয়টিকে চিহ্নিত করেছেন তা কুফর, শিরক ও কবীরা গুনাহর মতো বাহ্যতঃ মনে না হলেও এটাই ভ্ৰষ্টতার মূল বিষয়।কারণ, এতে পবিত্র কোরআনের জঘন্যতম বিকৃতি ও মনগড়া ব্যাখ্যারই শামীল।এটা এমন একটি জঘন্য বিষয় যা আজ পর্যন্ত প্রায় প্রত্যেক বাতিল ফিরকার মধ্যে পাওয়া গেছে এবং বর্তমানেও পরিলক্ষিত হয়। প্রায় প্রত্যেক বাতিল ফিরকা নিজেদের ভ্ৰান্তি প্রচারে পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরীফের কৃত্রিম আশ্রয় গ্রহণ করে এবং মনগড়া ব্যাখ্যার মাধ্যমে সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে গোমরাহ করে থাকে।

ইয়াযিদ কাফির হওয়া সর্ম্পকে


ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) সহ এক জামাত ইমাম তাকে কাফির বলেছেন। 

এবং লা‘নত দেয়ার উপযোগী বলেছেন। ইমাম গাযযালী (রহ) ও তার সাথে কিছু ইমাম তাকে ফাসিক, যালিম বলেছেন। 

বর্তমান ডা. জাকির নায়েক এবং আহলে হাদিসরা তাকে ঈমানদার হওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। ডা. জাকির নায়েক তার অনেক লেকচারে তাকে ‘রহমাতুল্লাহি আলাইহি’ বলেছেন। আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অধিকাংশ ইমাম তাকে কাফির ও লা‘নত দেয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন; আর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমার লিখিত ডা. জাকির নায়েকের স্বরূপ উন্মোচন’ এবং প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’ ২য় খণ্ড দেখুন; সেখানে সবিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। 

২২৭ . যাহাবী, সিয়ারু আলামিন আন্-নুবালা, ৭/১১৭পৃ. মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন।

২২৮ . ইবনে তাইমিয়া, আল-মুস্তাদরাক আ‘লা মাজমাউল ফাতওয়া, ২/২৫০পৃ. (শামিলা), ইবনে তাইমিয়া, ফাতওয়ায়ে মিসরিয়্যাহ লি ইবনে তাইমিয়া, ৮১পৃ.

২২৯ . যারকুশী, বাহারুল মুহিত ফি উসূলুল ফিকহে, ৮/৩৭৪পৃ.

২৩০. ইমাম আলূসী, তাফসীরে রুহুল মা‘য়ানী, সুরা মুহাম্মদ, ১৩/২২৯পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, প্রথম প্রকাশ. ১৪১৫হি.

ইমাম মাহমুদ আলূসী বাগদাদী (রহ) {১২৭০হি.} বলেন-

وأنا أذهب إلى جواز لعن مثله على التعيين ولو لم يتصور أن يكون له مثل من الفاسقين، والظاهر أنه لم يتب، واحتمال توبته أضعف من إيمانه، ويلحق به ابن زياد وابن سعد وجماعة فلعنة الله عز وجل عليهم أجمعين، وعلى أنصارهم وأعوانهم وشيعتهم ومن مال إليهم إلى يوم الدين ما دمعت عين على أبي عبد الله الحسين 
আমার মতে ইয়াযিদের মত লোককে লা‘নত দেয়া সঠিক, যদিও তার মতো এতো বড় ফাসিকের কথা কল্পনা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়; আর এটাও স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে সে কখনোই তওবা করেনি; (উপরন্তু) তার তওবা করার সম্ভাবনা তার ঈমান  পোষণ করার সম্ভবনার চেয়ে ক্ষীণতর। ইয়াযিদের পাশাপাশি ইবনে যিয়াদ, ইবনে সা‘আদ ও তার দল-বল এতে জড়িত। অবশ্যই (যেন) কেয়ামত দিবস অবধি এবং ইমাম হোসাইন (রা)-এর জন্যে (মু‘মিনদের) চোখের পানি যতদিন ঝরবে ততোদিন পর্যন্ত আল্লাহর লা‘নত তাদের সবার উপর পতিত হোক; তাদের বন্ধু-বান্ধব, সমর্থক, দলবল এবং ভক্তদের উপরও পতিত হউক!’’ ২৩১

হাফেজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ) (ওফাত.৯১১হি.) বলেন-
فأبوا إلا قتله، فقتل وجيء برأسه في طست حتى وضع بين يدي ابن زياد، لعن الله قاتله وابن زياد معه ويزيد أيضًا.
তারা (ইয়াযিদ বাহিনী) ইমাম হোসাইন (রা) কে শাহাদাত বরণ বা হত্যা ছাড়া অন্যকিছু মানলো না। তাকে শহীদ করে তাঁর শির মোবারক ইবনে যিয়াদের সামনে একটি থালায় করে আনা হয়। এবং বর্ণনা করেন,আপনার কর্তিত শির ইবনে যিয়াদের সামনে একটি থালায় করে আনা হয়। আপনাকে যে ব্যক্তি হত্যা করেছে তার উপর আল্লাহর লা‘নত (অভিসম্পাত); আরও লা‘নত হউক ইবনে যিয়াদ ও ইয়াযিদের উপর।’’ ২৩২ 

অনুরূপ ইমাম আসকালানী, যাহাবী, ইবনে আসির, ইবনে কাসির, আব্দুল হক মুহাদ্দিস, মোল্লা আলী ক্বারী প্রমুখ তাকে কাফির ও লা‘নত দেয়ার উপযোগী বলেছেন। ২৩৩

ইয়াযিদের আলোচনা এখানে সংক্ষিপ্ত করা হলো; বিস্তারিত আমার লিখিত উপরে উল্লেখিত কিতাবে পাবেন।  

হাদিস শরীফে কয়েকটি বাতিল ফিরকা



হুযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র বাণীসমূহে উম্মতের যাবতীয় বিষয়ের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। হালাল-হারাম, করণীয় ও বৰ্জনীয় সবকিছু উম্মতের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে গেছেন। সুন্নাহ যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দান করেছেন। তিনি আপন উম্মতকে ঈমানের পর নামায, রোযা ইত্যাদি পূণ্য কাজের প্রতি যত্নবান হবার কার্যত শিক্ষাদান করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি উমতের মধ্যে নানা ভ্রান্ত দলের আবির্ভাব সম্পর্কে কখনো সংক্ষেপে আবার কখনো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা দিয়েছেন, যাতে সরলপ্রাণ মুসলমান কখনো তাদের বাহ্যিক চাল-চলন, আচার-আচরণ, সুন্দর সুন্দর কথায় প্রতারিত না হয়। এমনকি তাদের স্বযত্নে নামায-রোযা ও সুললিত কণ্ঠের তেলাওয়াতে কোরআন শুনেও তাদের ভ্রান্তির বেড়াজালে আটকে না পড়ে, তজ্জন্য হুশিয়ার করে দিয়েছেন। নিম্নে সরলপ্রাণ মুসলমানদের জ্ঞাতার্থে ঐসব হাদিস শরীফ পেশ করা হলো।

উল্লেখ্য যে, হাদিস শরীফে কয়েকটি বাতিল ফিরকার নাম সহ বর্ণিত হয়েছে।

যথা-খারেজী,কদরীয়া, মুরজিয়া ও জাহমীয়া। এটা হুযুর সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের "ইলুমে গায়েব’ বা অদৃশ্য জ্ঞানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিশুদ্ধ হাদিগ্রন্থগুলোতে ঐসব ফিরকার বর্ণনায় পৃথক পৃথক অধ্যায় রয়েছে সিহাহ সিত্তা ছয়টি বিশুদ্ধ হাদিসের কিতাব । যথা, বোখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, নাসায়ী শরীফ, আবুদাউদ শরীফ, তিরমিযি শরীফ ও ইবনে মাজা শরীফে অন্যান্য বাতিল ফিরকার চেয়ে ‘খারেজীদের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা বিদ্যমান। কারণ, এ দলটি মুসলমানদের মধ্যে বাতিল দলসমূহের সর্বপ্রথম দল। পরবর্তী সকল বাতিল ফিরকার মধ্যে তাদের কিছু কিছু আক্বীদা ও চরিত্র বিদ্যমান। যুগে যুগে ভিন্ন ভিন্ন
নামে বিভিন্ন ফিরকার আত্মপ্রকাশ ঘটলেও মৌলিক ক্ষেত্রে খারেজীদের সাথে তাদের সাদৃশ্য রয়েছে। তাই খারেজীদের সম্পর্কেই সর্ব প্রথম আলোচনা করছি।


পবিত্র কোরআনের পর ইসলামী জগতের সর্বাধিক বিশুদ্ধ কিতাব বোখারী শরীফের দ্বিতীয় খণ্ডে ইমাম বোখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নিম্নোক্ত শিরোনামে একটা অধ্যায় পেশ করেন।


باب قتال الخوارجوالملحدين
অর্থাৎ খারেজী ও মুলহীদীনদের (বাতিল আক্ৰীদা পোষণকারী) হত্যা করার বিধান সম্বলিত অধ্যায়।


অতঃপর তিনি উক্ত অধ্যায়ে একটি হাদিসে ‘মওকুফ’ (১) বর্ণনা করেন-


وكان ابن عمر يراهم شرارخلق الله وقال انطلقوا إلى آيات نزلت فى الكفار فجعلو ها على المومنين-
অর্থাৎ প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুম খারেজীদেরকে আল্লাহর সৃষ্টিতে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মনে করতেন। অতঃপর তিনি তার কারণ হিসেবে বলেন, নিশ্চয়ই তারা (খারেজীগণ) ঐ সব আয়াতের প্রতি মনোনিবেশ করেছে যেগুলো কাফিরদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে।অতঃপর ঐসব আয়াতকে ঈমানদারদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছেন। (বোখারী শরীফ, পৃষ্ঠা ১০২৪)



আলোচ্য হাদিসে হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা খারেজীদের গোমরাহীর মূল কারণ হিসেবে যে বিষয়টিকে চিহ্নিত করেছেন তা কুফর, শিরক ও কবীরা গুনাহর মতো বাহ্যতঃ মনে না হলেও এটাই ভ্ৰষ্টতার মূল বিষয়।কারণ, এতে পবিত্র কোরআনের জঘন্যতম বিকৃতি ও মনগড়া ব্যাখ্যারই শামীল।এটা এমন একটি জঘন্য বিষয় যা আজ পর্যন্ত প্রায় প্রত্যেক বাতিল ফিরকার মধ্যে পাওয়া গেছে এবং বর্তমানেও পরিলক্ষিত হয়। প্রায় প্রত্যেক বাতিল ফিরকা নিজেদের ভ্ৰান্তি প্রচারে পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরীফের কৃত্রিম আশ্রয় গ্রহণ করে এবং মনগড়া ব্যাখ্যার মাধ্যমে সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে গোমরাহ করে থাকে।


অতএব, হযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম খারেজী সম্প্রদায় সম্পর্কে যেসব ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সেগুলো মনযোগ সহকারে পড়ন এবং সত্য সন্ধানে সচেষ্ট হোন।



একঃ হযরত সু’ যাঈদ ইবনে গাফাল রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু বলেন, হযরত মাওলা আলী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহ বলেন, যখন আমি তোমাদের নিকট রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহ তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে কোন হাদিস বর্ণনা করব আল্লাহর শপথ তখন আমি তাকে মিথ্যা প্ৰতিপন্ন করার চেয়ে আসমান থেকে নিচে পড়ে যাওয়াকে অনেক বেশী পছন্দ করি। আর যখন আমার ও তোমাদের মধ্যকার কোন বিষয় বর্ণনা করব তখন কৌশল হিসেবে ইশারা।ইঙ্গিতের আশ্রয় নিতে পারি। কারণ, যুদ্ধ এক ধরণের ধোঁকা স্বরাপ। আর নিশ্চয়ই আমি হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, অদূর ভবিষ্যতে শেষ যুগে এমন একটি সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা ।


যুবক শ্ৰেণীভুক্ত হবে এবং বিবেকবৃদ্ধি শূন্য হবে। তারা সবচেয়ে উত্তম কথা বলবে অর্থাৎ কোরআনের কথা বলবে। এ উক্তি তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে, যেভাবে তীর শিকারী থেকে দ্রুত বেরিয়ে যায়। তোমরা যেখানেই তাদের সাক্ষাত পাও, তাদেরকে হত্যা কর। কারণ, যে ব্যক্তি তাদেরকে হত্যা করবে তার জন্য নিশ্চয়ই কেয়ামত দিবসে বড় সওয়াব রয়েছে। (বোখারী শরীফ ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা ১০২৪) ।


১) যে হাদিসের বর্ণনা সূত্র সাহাবা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়, তাকে হাদিস শাত্রের পরিভাষার- 'হাদিসে মওকুফ' বলে। (এই ধরণের হাদিস বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্য।)



দুইঃ হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি হযুর করিম সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে নামাযের তুলনায় তোমরা তোমাদের নামাযকে নগণ্য মনে করবে । অনুরূপভাবে তোমাদের রোযাকে তাদের রোযার তুলনায় এবং তোমাদের আমলকে তাদের আমলের মোকাবিলায় নগণ্য মনে করবে। তারা কোরআন পাঠ তাকরবে,তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এভাবে বেরিয়ে যাবে, যেভাবে তীর শিকার কৃত প্রাণী থেকে বেরিয়ে যায়। (বোখারী শরীফ ২য় , পৃষ্ঠা ৭৫৬)।


তিনঃ হযরত আবু সাঈদ খুদরী ও হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা হতে বর্ণিত, হুযুর করিম সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতের মধ্যে মতানৈক্য ও ফিরকা সৃষ্টি হবে। এমন এক সম্প্রদায় বের হবে যারা সুন্দর ও ভাল কথা বলবে। আর কাজ করবে মন্দ। তারা কোরআন পাঠ করবে- তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন অর্থাৎ ইসলাম থেকে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে,যেভাবে তীর শিকারী থেকে বেরিয়ে যায়। তারা দ্বীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে না, অথচ তীর ফিরে আসা সম্ভব। তারা সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট। ঐ ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ যে তাদের সাথে যুদ্ধ করবে এবং যুদ্ধে তাদের দ্বারা শাহাদাত বরণ। করবে। তারা মানুষকে আল্লাহর কিতাব (কোরআন)-এর প্রতি দাওয়াত দেবে, অথচ তারা আমার কোন আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে লড়বে সে অপরাপর উম্মতের তুলনায় আল্লাহ তা'আলার অনেক নিকটতম হবে। সাহাবা কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি
ওয়াসাল্লাম! তাদের চিহ্ন কি? হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, অধিক মাথা মুণ্ডানো। (আবু দাউদ শরীফ, পৃষ্ঠা ৬৫৫ পৃষ্ঠা ৩০৮) ।


চারঃ হযরত ওরাইক ইবনে শিহাব হতে বণিত, তিনি বলেন, আমি আশা পোষণ করছিলাম যেন সাথে আমার নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবা কেরামের কারো সাথে সাক্ষাৎ লাভ হয় যাতে আমি তার নিকট খারেজী সম্প্রদায় সম্পর্কে জানতে পারি। অতঃপর হযরত আবু বারদা
আসলামী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুর সাথে তার সঙ্গীসহ ঈদের দিন আমার।সাথে সাক্ষাৎ হলো। তখন আমি তাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, আপনি হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট খারেজীদের সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেন, হ্যা আমি রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমার দু'কানে শুনেছি এবং তাঁকে আমার দু'চক্ষে দেখেছি। হুযুর করিম সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কিছু জিনিসপত্র নিয়ে আসা হলো। অতঃপর তিনি তা বন্টন করলেন। তার ডানে-বামে উপবিষ্টদের দান করলেন এবং তার পেছনে অবস্থানকারীদের কিছুই দিলেন না। তখন তার পেছন থেকে একব্যক্তি দাড়িয়ে বলল, “হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আপনি বন্টনের ক্ষেত্রে ন্যায় পরায়নতা অবলম্বন করেননি'। “ঐ ব্যক্তির মাথা মুণ্ডানো এবং তার পরনে এক জোড়া সাদা কাপড় ছিল।" এটা রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে খুব অসন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন “আল্লাহর শপথ! তোমরা আমার পর এমন কোন ব্যক্তি পাবে না যে আমার চেয়ে অধিক ন্যায় পরায়ণ হবে।" অতঃপর হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, “শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায় বের হবে এ ব্যক্তি যেন তাদের একজন। তারা কোরআন পাঠ করবে, তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না।তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেমন তীর শিকারী থেকে বেরিয়ে যায়। তাদের চিহ্ন হলো-অধিক মাত্রায় মাথা মুণ্ডানো। এরা সর্বদা বের হতে থাকবে। আর তাদের সর্বশেষ দল বের হবে কানা দাজ্জালের সাথে। যখন তাদের সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হয়, তখন মনে করো এরাই সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট। (নাসায়ী শরীফ, মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩০৮ ও ৩০৯)।


পাঁচঃ হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা হযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ছিলাম তিনি গনিমতের মালপত্র বন্টন করছিলেন। তখন হুযুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বনী তামীম গোত্রের আল খোয়াইসারা নামক একব্যক্তি আসল। অতঃপর সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইনসাফ করুন। তখন হযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহ তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ধ্বংস হোক তোমার! কে ইনসাফ করবে? যদি আমি ইনসাফ না করি। তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হতে যদি আমি ইনসাফ না করতাম। তখন হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহু বললেন, (হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)!  আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার শিরচ্ছেদ করে ফেলব। অতঃপর হুযুর আকদাস সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই তার এমন অনেক অনুসারী আছে, তোমাদের মধ্যে অনেকে আপন নামাযকে তাদের নামাযের তুলনায় হীন মনে করবে, অনুরূপ নিজের রোযাকে তার রোযার তুলনায় সামান্য মনে করবে। তারা কোরআন তেলাওয়াত করবে আর তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন হতে।এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকারী থেকে বেরিয়ে যায়। তীরের লোহা,পাটি ও পালক সমূহের দিকে দেখা গেলে তাতে কিছুই পাওয়া যাবে না। অথচ তীর ময়লা ও রক্ত অতিক্রম করে বেরিয়ে গেছে। (অর্থাৎ শিকারী প্রাণীর।দেহভেদ করে এতো দ্রুত বেরিয়ে গেছে যে, ময়লা বা রক্ত তীরের গায়ে লাগার সময় হয়নি। অনুরূপ ভাবে এরাও দ্বীন হতে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে যে, দ্বীনের কোন আদৰ্শই তাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকবে না)। তাদের নিদর্শন হলো (তাদের মধ্যে) একজন কালো ব্যক্তি, তার একটি বাহু মহিলাদের স্তনের মতো অথবা নরম মাংসের টুকরোর মতো খুলতে থাকবে। তারা (ঐ ব্যক্তির নেতৃত্বাধীন ও অনুসারীগণ) মানুষের উত্তম দলের উপর আক্রমণ করবে। (অর্থাৎ হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ও তাঁর অনুসারীর উপর)। হযরত আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আমি এ হাদিস হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত আলী ইবনে আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন আমিও তাঁর সাথে ছিলাম। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ঐ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিলেন। তখন তাকে খুঁজে বের করে নিয়ে আসা হলো। তার মধ্যে হযুর সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বর্ণিত বৈশিষ্ট্যাবলী দেখলাম। (বোখারী শরীফ)।


অপর বর্ণনায় আছে, গৰ্ভচোখ, উচু কপাল, ঘনদাড়ি, মাংসপূর্ণ গাল, মাথা মুণ্ডানো একব্যক্তি এসে বলল, হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহকে ভয় করো। তখন হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কে আল্লাহর আনুগত্য করবে? যদি আমি তার অবাধ্য হই। আল্লাহ তাআলা আমাকে পৃথিবীবাসীর জন্য আমানতদার করে প্রেরণ করেছেন, আর তোমরা আমাকে আমীন মেনে নিতে পারছনা। তখন একজন সাহাবী হুযুর সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করার অনুমতি প্রার্থনা করলে হুযুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বাধা দিলেন। আর যখন ঐ ব্যক্তি প্রত্যাবর্তন করল তখন হুযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, নিশ্চয়ই এ ব্যক্তি থেকেই এমন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা কোরআন পড়বে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমনিভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকারকৃত প্রাণী থেকে বেরিয়ে যায়। তারা মুসলমানদেরকে হত্যা করবে, মূর্তি পূঁজারীদেরকে ছেড়ে দেবে। আমি যদি তাদেরকে পাই, তাহলে নিশ্চয়ই আ'দ গোত্রের মতো ধ্বংস করে দেব।

(বোখারী শরীফ, মুসলীম শরীফ ও মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৫৩৪-৫৩৫)।


ছয়ঃ হযরত জাবের ইবনে আবদিল্লাহ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিইররানা (মকা শরীফ ও তায়েফ এর মধ্যবর্তী) নামক স্থানে রূপার টুকরো ও গণিমতের মাল (যুদ্ধলব্ধমাল) বন্টন করছিলেন, তখন তিনি হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর কোলে (মাথা মোবারক রেখে) অবস্থান করছিলেন। তখন এক ব্যক্তি (যুল খোয়াইসারা তামীমী) বলল, “হে । মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইনসাফ করুন। কারণ আপনি (বন্টনের ক্ষেত্রে) ইনসাফ করেননি। তখন হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার ধাংস হোক। আমার পরে কে ইনসাফ করবে? যদি আমি ইনসাফ না করি। তখন হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমাকে অনুমতি দিন আমি  মুনাফিকের শিরচ্ছেদ করে দিই। অতঃপর হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম (হত্যার অনুমতি না দিয়ে) বললেন, নিশ্চয়ই তার অনেক অনুসারী হবে যারা কোরআন করিম পড়বে যা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবেনা। তারা দ্বীন থেকে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকারকৃত প্রাণী থেকে বেরিয়ে যায়। (ইবনে মাজা শরীফ, পৃষ্ঠা ১৬)।


সাতঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবি আওফা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, খারেজীগণ জাহান্নামের কুকুরদল। (ইবনে মাজা শরীফ, পৃষ্ঠা ১৬)।


আটঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, এমন এক দলের আবির্ভাব ঘটবে যারা কোরআন পড়বে আর তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। যখন এদের একদলের আত্মপ্রকাশ হবে, (একসময়) ধ্বংস হয়ে যাবে। হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা এ আনহুমা বলেন, আমি হুযুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে “যখন তাদের একদল বের হবে, ধ্বংস হয়ে যাবে, অবশেষে তাদের উপস্থিতি দাজালের আবির্ভাব হবে" বিশবারের বেশী বলতে শুনেছি । (ইবনে মাজা শরীফ, পৃষ্ঠা ১৬)


নয়ঃ হযরত জাবের ইবনে আবদিল্লাহ রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইন থেকে ফেরার পথে জিইররানা নামক স্থানে পৌছলে তার নিকট একব্যক্তি আসল। ঐ সময় হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর কাপড়ে কিছু রূপা ছিল। আর রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের মুঠোতে করে লোকজনকে দান করছিলেন। তখন আগন্তুক ব্যক্তিটি বলল, হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! ইনসাফ' করুন। তখন হুযুর পাক সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার ধ্বংস হোক, আমি যদি ইনসাফ না করি কে ইনসাফ করবে? আমি যদি ইনসাফ না করি তাহলে নিশ্চয়ই আমি ক্ষতিগ্রস্ত হব। অতঃপর হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অনুমতি দিন, আমি এ মুনাফিককে হত্যা করব। হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মা'আযাল্লাহ (আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি অর্থাৎ না) কারণ, মানুষ বলবে-আমি আমার সঙ্গীদের হত্যা
করেছি। নিশ্চয়ই এ ব্যক্তি এবং তার অনুসারীগণ কোরআন তেলাওয়াত করবে, যা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে, যেমন শিকারকৃত প্রাণী থেকে তীর বেরিয়ে যায়। (মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড,
পৃষ্ঠা ৩৪০)।


দশঃ মুসলিম শরীফের অপর বর্ণনায় রয়েছে, এ ব্যক্তির (যুল খোয়াইসারা তামীমী) অনুসারী এমন একদল বের হবে যারা সুন্দর কণ্ঠে (তাজবীদের নিয়মানুসারে) কোরআন তেলাওয়াত করবে। হযরত ওমারা ইবনে কাকা বলেন, আমি ধারণা করছি যে, হুযুর করিম সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি আমি তাদেরকে (খারেজীদেরকে) পাই, তাহলে সামুদ গোত্রের মত হত্যা করব। (মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৪১)।

(সংকলনঃ- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা- কাযী মঈন উদ্দিন আশরাফী)।



শয়তানের চক্রান্ত থেকে আত্মরক্ষার উপায়



শয়তানের  বাসস্থান :

জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) থেকে শুনেছি তিনি বলেন,


নিশ্চয়ই ইবলীসের আসন সমুদ্রের উপরে স্থাপিত, সে লোকদেরকে ফিতনায় লিপ্ত করার জন্য তার বাহিনী প্রেরণ করে। শয়তানের নিকট সর্বাধিক বড় সেই, যে সর্বাধিক ফিৎনা সৃষ্টিকারী’।

[মুসলিম হা/২৮১৩।


শয়তানের মূল আবাসস্থল সমুদ্রে। এছাড়াও তার কিছু থাকার জায়গা রয়েছে। যেমন মানুষের নাকের ছিদ্রে থাকে।


নবী করীম (ﷺ) বলেন,


إِذَا اسْتَيْقَظَ أُرَاهُ أَحَدُكُمْ مِنْ مَنَامِهِ فَتَوَضَّأَ فَلْيَسْتَنْثِرْ ثَلاَثًا، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَبِيتُ عَلَى خَيْشُومِهِ،
"তোমাদের কেউ যখন ঘুম হ’তে উঠে এবং অযূ করে তখন তার উচিৎ নাক তিনবার ঝেড়ে ফেলা। কারণ শয়তান তার নাকের ছিদ্রে রাত কাটিয়েছে’।

[বুখারী হা/৩২৯৫; মুসলিম হা/২৩৮। ]

কবিরাহ গুনাহ এর দরুন কেউ কাফের হবে না



সালাফি তথা আহলে হাদিসরা এ বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, বিশেঃষত নামায নিয়ে। 

অথচ ইমাম যাহাবি (রহ) বলেন- 

 هذا قول أهل السُّنّة والجماعة-‘

‘এটাই আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আক্বিদা যে কবিরা গুনাহের দরুন (ফাসেক হবে) কেউ কাফির হবে না।’’ ২১৯ 

ইমাম সুয়ূতী (রহ) বলেন-

لِأَنَّ مَذْهَبَ أَهْلِ السُّنَّةِ أَنْ لَا يَكْفُرَ أَحَدٌ بِذَنَبٍ

-‘‘আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মাযহাব হলো কেউ গুনাহের কারণে কাফের হয়না।’’ ২২০ 

আহলে হাদিসদের মুহাদ্দিস মোবারকপুরী বলেন-

وَقَالَ الْقَاضِي عِيَاضٌ وَهُوَ مَذْهَبُ أَهْلِ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ وَأَمَّا الْكَبَائِرُ فَلَا يُكَفِّرُهَا إِلَّا التَّوْبَةُ

-‘‘ইমাম কাজী আয়ায (রহ) এর এবং আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের মাযহাব হল কবিরাহ গুনাহের জন্য কেউ কাফির হবে না; যদিও তা তাওবা ছাড়া মাফ হয় না।’’২২১ 

তাই নামাযসহ বিভিন্ন ইবাদত কেহ না করলে তাকে কাফির বলা যাবে না; যতক্ষণ না সে এগুলো অস্বীকার না করবে।

ইয়াযিদ সম্পর্কে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অভিমতঃ

ইয়াযিদ কাফির হওয়া সর্ম্পকে বিভিন্ন চার মাযহাবের ইমামসহ ও অনেক আকায়েদের ইমামগণের মধ্যে মতপার্থক্য বিদ্যমান। 



ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) সহ এক জামাত ইমাম তাকে কাফির বলেছেন। ২৩০ 

এবং লা‘নত দেয়ার উপযোগী বলেছেন। ইমাম গাযযালী (রহ) ও তার সাথে কিছু ইমাম তাকে ফাসিক, যালিম বলেছেন। 

বর্তমান ডা. জাকির নায়েক এবং আহলে হাদিসরা তাকে ঈমানদার হওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। ডা. জাকির নায়েক তার অনেক লেকচারে তাকে ‘রহমাতুল্লাহি আলাইহি’ বলেছেন। আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অধিকাংশ ইমাম তাকে কাফির ও লা‘নত দেয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন; আর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমার লিখিত ডা. জাকির নায়েকের স্বরূপ উন্মোচন’ এবং প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’ ২য় খণ্ড দেখুন; সেখানে সবিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। 


২২৭ . যাহাবী, সিয়ারু আলামিন আন্-নুবালা, ৭/১১৭পৃ. মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন।

২২৮ . ইবনে তাইমিয়া, আল-মুস্তাদরাক আ‘লা মাজমাউল ফাতওয়া, ২/২৫০পৃ. (শামিলা), ইবনে তাইমিয়া, ফাতওয়ায়ে মিসরিয়্যাহ লি ইবনে তাইমিয়া, ৮১পৃ.

২২৯ . যারকুশী, বাহারুল মুহিত ফি উসূলুল ফিকহে, ৮/৩৭৪পৃ.

২৩০. ইমাম আলূসী, তাফসীরে রুহুল মা‘য়ানী, সুরা মুহাম্মদ, ১৩/২২৯পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, প্রথম প্রকাশ. ১৪১৫হি.


ইমাম মাহমুদ আলূসী বাগদাদী (রহ) {১২৭০হি.} বলেন-

وأنا أذهب إلى جواز لعن مثله على التعيين ولو لم يتصور أن يكون له مثل من الفاسقين، والظاهر أنه لم يتب، واحتمال توبته أضعف من إيمانه، ويلحق به ابن زياد وابن سعد وجماعة فلعنة الله عز وجل عليهم أجمعين، وعلى أنصارهم وأعوانهم وشيعتهم ومن مال إليهم إلى يوم الدين ما دمعت عين على أبي عبد الله الحسين 

আমার মতে ইয়াযিদের মত লোককে লা‘নত দেয়া সঠিক, যদিও তার মতো এতো বড় ফাসিকের কথা কল্পনা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়; আর এটাও স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে সে কখনোই তওবা করেনি; (উপরন্তু) তার তওবা করার সম্ভাবনা তার ঈমান  পোষণ করার সম্ভবনার চেয়ে ক্ষীণতর। ইয়াযিদের পাশাপাশি ইবনে যিয়াদ, ইবনে সা‘আদ ও তার দল-বল এতে জড়িত। অবশ্যই (যেন) কেয়ামত দিবস অবধি এবং ইমাম হোসাইন (রা)-এর জন্যে (মু‘মিনদের) চোখের পানি যতদিন ঝরবে ততোদিন পর্যন্ত আল্লাহর লা‘নত তাদের সবার উপর পতিত হোক; তাদের বন্ধু-বান্ধব, সমর্থক, দলবল এবং ভক্তদের উপরও পতিত হউক!’’ ২৩১

হাফেজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ) (ওফাত.৯১১হি.) বলেন-

فأبوا إلا قتله، فقتل وجيء برأسه في طست حتى وضع بين يدي ابن زياد، لعن الله قاتله وابن زياد معه ويزيد أيضًا.

তারা (ইয়াযিদ বাহিনী) ইমাম হোসাইন (রা) কে শাহাদাত বরণ বা হত্যা ছাড়া অন্যকিছু মানলো না। তাকে শহীদ করে তাঁর শির মোবারক ইবনে যিয়াদের সামনে একটি থালায় করে আনা হয়। এবং বর্ণনা করেন,আপনার কর্তিত শির ইবনে যিয়াদের সামনে একটি থালায় করে আনা হয়। আপনাকে যে ব্যক্তি হত্যা করেছে তার উপর আল্লাহর লা‘নত (অভিসম্পাত); আরও লা‘নত হউক ইবনে যিয়াদ ও ইয়াযিদের উপর।’’ ২৩২ 

অনুরূপ ইমাম আসকালানী, যাহাবী, ইবনে আসির, ইবনে কাসির, আব্দুল হক মুহাদ্দিস, মোল্লা আলী ক্বারী প্রমুখ তাকে কাফির ও লা‘নত দেয়ার উপযোগী বলেছেন। ২৩৩

ইয়াযিদের আলোচনা এখানে সংক্ষিপ্ত করা হলো; বিস্তারিত আমার লিখিত উপরে উল্লেখিত কিতাবে পাবেন।